আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
“কুমড়ো ফুলে ফুলে
নুয়ে পরেছে লতাটা,
সজনে ডাঁটায়
ভরে গেছে গাছটা,
আর আমি
ডালের বড়ি শুকিয়ে রেখেছি।
খোকা তুই কবে আসবি ?
কবে ছুটি?”
চিঠিটা তার পকেটে ছিল
ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা।
“মাগো, ওরা বলে
সবার কথা কেড়ে নেবে।
তোমার কোলে শুয়ে
গল্প শুনতে দেবে না।
বলো, মা,
তাই কি হয়?
তাইতো আমার দেরি হচ্ছে।
তোমার জন্যে
কথার ঝুরি নিয়ে
তবেই না বাড়ি ফিরবো।
লহ্মী মা,
রাগ ক’রো না,
মাত্রতো আর ক’টা দিন।”
“পাগল ছেলে,”
মা পড়ে আর হাসে,
“তোর ওপরে রাগ ক’রতে পারি !”
নারিকেলের চিড়ে কোটে,
উড়কি ধানের মুড়কি ভাজে,
এটা-সেটা
আর কত কী !
তার খোকা যে বাড়ি ফিরবে
ক্লান্ত খোকা।
কুমড়ো ফুল
শুকিয়ে গেছে,
ঝ'রে পড়েছে ডাঁটা,
পুঁই লতাটা নেতানো
“খোকা এলি ?”
ঝাপসা চোখে মা তাকায়
উঠানে উঠানে
যেখানে খোকার শব
শকুনীরা ব্যবচ্ছেদ করে।
এখন
মা’র চোখে চৈত্রের রোদ
পুরিয়ে দেয় শকুনীদের।
তারপর
দাওয়ায় ব’সে
মা আবার ধান ভানে,
বিন্নি ধানের খই ভাজে,
খোকা তার
কখন আসে কখন আসে!
এখন
মা’র চোখে শিশির-ভোর
স্নেহের রোদে ভিটে ভ’রেছে।
কোন এক মাকে
-আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
আবৃত্তি : জান্নাতুর ফেরদাউস জুঁই
348/349 DILU ROAD Dhaka
Copyright © 2017 - Sosas Bangladesh, All rights reserved.
Powered by Techo Haat